পুজোর ভিড় এবং মেলামেশার ফলে বাড়তে পারে করোনা। শনিবার জেলাশাসকদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে এ বিষয়ে সতর্ক করে দিলেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে জেলাশাসকদের পুজোয় সতর্কতা-বিধি পালন নিশ্চিত করতে ও করোনা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে বলেন।
প্রসঙ্গত, শনিবারের বুলেটিন অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা এ যাবৎ সর্বাধিক। এ ছাড়া, প্রতি দিনের কেস পজ়িটিভিটির হারে কেন্দ্রকে ছাপিয়ে গিয়েছে রাজ্য। সারা দেশে প্রতি দিন নমুনা পরীক্ষার সংখ্যার নিরিখে আক্রান্তের হার ৬.২৯ শতাংশ। সেই মাপকাঠিতে আট শতাংশের গণ্ডি (শুক্রবার ৮.৪০ শতাংশ, শনিবার ৮.৩৭ শতাংশ) পেরিয়ে গিয়েছে বঙ্গ।
এই আবহে এ দিন মুখ্যসচিব জেলাশাসকদের জানান, পুজোর পরে হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। সেই কারণে প্রতি জেলায় সেফ হোম এবং কোভিড শয্যার সংখ্যা দ্রুত বাড়াতে হবে।। অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা, ভেন্টিলেটর, ওষুধপত্র দ্রুত কেনার ব্যাপারেও জোর দেওয়া হয়েছে। মণ্ডপে যাতে মাস্ক ছাড়া কেউ না-আসেন, প্যান্ডেল যাতে খোলামেলা হয়, স্যানিটাইজ়ার রাখা হয়, তা নিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানান, এখন রাজ্যে সরকারি হাসপাতালে সিসিইউ এবং এইচডিইউ শয্যার সংখ্যা ১২৫০। পুজোর আগে সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ১৫০০ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। কোভিড শয্যা অন্তত ৫০০ বাড়ানো হবে। বালটিকুরি, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এম আর বাঙুর, চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে শয্যা বাড়বে। সব জেলাও সিসিইউ, কোভিড শয্যার সংখ্যা বাড়াবে। স্বাস্থ্যসচিব জানান, পুজোয় টেলিমেডিসিন, হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে ফোনে সহায়তা, অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চালু থাকবে। পুজোর সময়ে স্বরাষ্ট্র দফতরের সুরক্ষা-বিধি মেনে চললে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু যদি তা বাড়ে, সে-জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
রাজ্যে কেস পজিটিভিটির হার ইতিমধ্যেই চিন্তায় ফেলেছে চিকিৎসক মহলকে। কার্ডিয়োথোরাসিক সার্জন কুণাল সরকারের কথায়, ‘‘আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও পরীক্ষার সংখ্যা কম হওয়ায় পজ়িটিভিটি হারে আমরা ৯ শতাংশ ছুঁয়ে ফেলতে চলেছি। এ ভাল লক্ষণ নয়। প্রতি দিন অন্তত ৬৫ হাজার নমুনা পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা নিতে হবে।’’ আইএমএ’র রাজ্য শাখাও স্বাস্থ্যসচিবের কাছে পরীক্ষার সংখ্যাবৃদ্ধির আর্জি জানিয়েছে। বঙ্গে এ দিন আক্রান্তের সংখ্যা এ পর্যন্ত সর্বাধিক (৩৫৯১) হলেও নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ৪২,৮৫৫।
0 Comments